রোজা অসৎ প্রবৃত্তির মুখে ছিপি এঁটে দেয় এবং এর সব গলিপথ বন্ধ করে দেয়। রোজা এক দিকে অন্যায়-অনাচার ও অসততাকে নিষিদ্ধ করে দেয়, অপর দিকে দীর্ঘ সময় উপবাস থাকতে বাধ্য করে দেহের পাশবিক শক্তিকে দুর্বল করে দেয়। এভাবে বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ কঠোর নিয়ন্ত্রণের ফলে অসৎ প্রবৃত্তি দুর্বল ও পরাজিত হয় এবং সৎ প্রবৃত্তি প্রবল ও বিকশিত হয়। দীর্ঘ সময় এ অনুশীলনের ফলে রোজাদার ব্যক্তি অন্যায়, অসৎ ও দুর্নীতিমুক্ত হয়ে সৎ ও সুন্দর মানুষে পরিণত হতে পারে।
তবে এ জন্য সুবেহ সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কেবল পানাহার ও স্ত্রী সহবাস বর্জন করাই যথেষ্ট নয়, বরং এতদসঙ্গে অন্যান্য সব বিধিনিষেধও যথাযথভাবে মেনে চলা আবশ্যক। হাদিসে বলা হয়েছেঃ ‘যে ব্যক্তি রোজা অবস্থায় মিথ্যা কথা ও অন্যায় কাজ বর্জন করল না, তার পানাহার বর্জন আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য নয়।’ (বুখারি) এ হাদিসের ব্যাখ্যায় মিশকাতের টীকায় বলা হয়েছে, ‘রোজা আবশ্যক করে দেয়ার দ্বারা শরিয়তের উদ্দেশ্য শুধু ক্ষুধা-তৃষ্ণায় কষ্ট দেয়া নয়, বরং এর আসল উদ্দেশ হলো মন্দ অনুপ্রেরণাকে দমন করা, রাগের অগ্নিশিখাকে নির্বাপিত করা, নফসে আম্মারা বা কুপ্রবৃত্তিকে নফসে মুতমাইন্না বা সুপ্রবৃত্তির অনুগত বানিয়ে দেয়া প্রভৃতি। রোজার দ্বারা যদি এ উদ্দেশ্যগুলো হাসিল না হয়, তাহলে তার রোজার দ্বারা ক্ষুধা-তৃষ্ণায় কষ্ট করা ছাড়া আর কোনো ফায়দাই হয় না এবং আল্লাহ তা’আলা সে রোজা কবুলও করেন না।’
রোজা মানুষকে আত্মসংযমে অভ্যস্ত করেঃ ভালো মানুষের অন্যতম আবশ্যকীয় বৈশিষ্ট্য হলো আত্মসংযম। লোভ-লালসা, কামনা-বাসনা ও দেহের অন্যান্য দাবির গোলামে পরিণত না হয়ে সেগুলোকে নিয়ন্ত্রিত করার নামই আত্মসংযম। আত্মসংযমরূপ নিয়ন্ত্রক শক্তি যার মধ্যে অনুপস্থিত, সে ব্যক্তি লোভ-লালসা ও কামনা-বাসনার লাগামহীন ঘোড়ার পিছে ছুটতে গিয়ে নিজেকে একেবারে নিু স্তরে নামিয়ে দেয়। এমতাবস্থায় সে ব্যক্তির সামনে ক্ষুণ্নিবৃত্তি, যৌন লালসা পূরণ, দুনিয়াবি ভোগ-বিলাস এবং আরাম-আয়েশ ছাড়া অন্য কোনো মহৎ উদ্দেশ্যই থাকে না। এ ধরনের মানুষ সমাজের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য বোধের কথা একবারেই বিস্মৃত হয়ে যায়। বিকারগ্রস্ত দেহমনের অন্যায় আবদার পূরণ করতে গিয়ে সে অন্যায়-অপকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়ে।
ধৈর্য ও সহনশীলতার শিক্ষাঃ সুন্দর সমাজ গঠনের জন্য যারা কাজ করবে, সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা দায়িত্ব পালন করবে, তাদেরকে অবশ্যই ধৈর্যশীল হতে হবে। রোজা মানুষকে ধৈর্যশীলরূপে গড়ে তোলে। সারাদিন উপবাস থাকার ফলে বিকেল বেলা যখন ক্ষুধায় কাতর হয়ে পড়ে, সেই কঠিন মুহূর্তেও রোজা তাকে কোনো কিছু না খেয়ে ধৈর্য ধারণ করতে বলে। রোজা অবস্থায় দিনের বেলায় যৌন অনুভূতি জাগ্রত হলেও রোজা স্ত্রীকে ভোগ করতে বারণ করে তাকে ধৈর্য ধারণে বাধ্য করে। সারাদিন উপবাস থাকা এবং কাজকর্মের ফলে সন্ধ্যা বেলায় অত্যন্ত ক্লান্ত হয়ে পড়লেও রোজা তাকে পূর্ণ বিশ্রাম নিতে দেয় না। বরং যত কষ্টই হোক না কেন ধৈর্য ধারণ করে রাত জাগরণ ও ইবাদত করতে উদ্বুদ্ধ করে। রোজা তাকে রাগ সংবরণ করে ধৈর্য ধারণ করতে বলে। কেউ তার সাথে ঝগড়া বা মারামারি করতে এলে ‘আমি
এভাবে প্রতিটি ক্ষেত্রে রোজা মানুষকে ধৈর্যের অনুশীলনের মাধ্যমে উত্তম ধৈর্যশীল হিসেবে গড়ে তোলে। ধৈর্যশীল ব্যক্তিরা দুনিয়াতে যেমন সফল হয়, তেমনিভাবে তারা আখিরাতেও সফল হবে। রাসূল (সাঃ) রমজান মাস সম্পর্কে ইরশাদ করেন, ‘এ মাস হলো ধৈর্যের মাস, আর ধৈর্যের বিনিময় হলো জান্নাত।’
সদাচার ও মিতাচারের প্রশিক্ষণঃ রোজাদারের জন্য যেসব বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, তার অন্যতম হলো ‘রোজা অবস্থায় তোমাদের কেউ যেন অশ্লীল ও মূর্খতাপূর্ণ কথা না বলে, ঝগড়া ও গালমন্দ না করে। যদি কেউ তার সাথে ঝগড়া করে তাহলে সে যেন বলে, ‘আমি একজন রোজাদার।’ (বুখারি, মুসলিম)
যেসব কাজ ও কথাবার্তা সমাজের শৃঙ্খলা বিনষ্ট করে, রোজা সেগুলোকে নিষিদ্ধ করেছে। যেমন- মিথ্যা কথা, অন্যায় কাজ, গিবত ও পরনিন্দা, কটুকথা, ধোঁকা ও প্রতারণা, হিংসা-বিদ্বেষ, অশ্লীল কথা ও কাজ, গালমন্দ ও ঝগড়া-বিবাদ ইত্যাদি। রোজা মানুষকে এসব কথা ও কাজ থেকে বিরত রেখে একজন সদাচারী, মিতাচারী ও সুশীল মানুষে পরিণত করে। এ ধরনের মানুষের দ্বারাই সমাজ পরিশীলিত, সুশৃঙ্খল ও কলুষমুক্ত হতে পারে।
সময়ানুবর্তিতা ও নিয়মানুবর্তিতার প্রশিক্ষণঃ রোজা মানুষকে নিয়মতান্ত্রিক ও নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনে অভ্যস্ত করে তোলে। রুটিন বা সময়সূচি অনুযায়ী যথাসময়ে নির্দিষ্ট কাজ আঞ্জাম দেয়ার প্রশিক্ষণ রোজার মাধ্যমে হয়ে থাকে। নির্দিষ্ট সময়ে সেহরি খাওয়া, নির্দিষ্ট সময়ে ইফতার করা, নির্দিষ্ট সময়ে তারাবিহর নামাজ আদায় করা, নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া, নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম থেকে ওঠা এবং নির্দিষ্ট সময়ে এ কাজগুলো আঞ্জাম দেয়ার জন্য দিন-রাতের অন্যান্য কাজও নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করতে হয়। এতে সময়ানুবর্তিতার অভ্যাস গড়ে ওঠে এবং কোনো কাজ জমা না থেকে যথাসময়ে সম্পন্ন হয়ে থাকে। এ ছাড়া সুনির্দিষ্ট নিয়ম মেনে রোজা পালন করতে হয় বলে রোজার মাধ্যমে মানুষ নিয়মানুবর্তিতায় অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। সুচারুরূপে কাজ সম্পন্ন করার জন্য দায়িত্ববান ব্যক্তিদের জন্য এগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সমবেদনা, সংবেদনশীল ও সহমর্মিতার শিক্ষাঃ রোজা মানুষকে অন্যের দুঃখ-কষ্ট ও ব্যথা-বেদনায় সংবেদনশীল, সমব্যথী ও সহমর্মী করে তোলে। যারা বিত্তশালী তারা গরিবের দুঃখ-কষ্ট ও ক্ষুধার জ্বালা উপলব্ধি করতে পারে না। রোজা রোজাদার ব্যক্তিকে দীর্ঘ সময় উপবাস রেখে ক্ষুধার কী জ্বালা তা মর্মে মর্মে বুঝিয়ে দেয়। এতে তার মধ্যে বিবেকবোধ জাগ্রত হয় এবং সে উপলব্ধি করতে সক্ষম হয় যে, তার পার্শ্ববর্তী যেসব মানুষ অভাবের কারণে না খেয়ে থাকতে বাধ্য হয়, তারা ক্ষুধায় কত কষ্ট করে। এ উপলব্ধি তাকে দরিদ্র ও ক্ষুধার্তদের প্রতি সাহায্যের হাত সম্প্রসারিত করতে অনুপ্রাণিত করে থাকে। এ জন্যই রাসূল (সাঃ) ইরশাদ করেন, ‘এ মাস সমবেদনা ও সহমর্মিতার মাস।’
দানশীলতা ও সহৃদয়তার প্রশিক্ষণঃ রোজা কৃপণতা ও সঙ্কীর্ণতা দূর করে মানুষকে উদার ও দানশীল করে তোলে। সে মানুষকে প্রশিক্ষণ দিয়ে এ ব্যাপারে অভ্যস্ত করে তোলে। হাদিসে রয়েছে, যে ব্যক্তি এ মাসে কোনো রোজাদারকে ইফতার করায়, তার জন্য সেটা গুনাহ মাফ ও জাহান্নাম থেকে নাজাতের কারণ হয়ে যায় এবং তাকে ওই রোজাদারের সম পরিমাণ ছওয়াব দেয়া হয়। .... আর যে ব্যক্তি রোজাদারকে পরিতৃপ্ত করে খাওয়াবে, আল্লাহ তাকে আমার হাউসে কাউছার থেকে এমন পানীয় পান করাবেন যে, জান্নাতে প্রবেশাবধি তার আর পিপাসা হবে না।’
রমজান মাসে মানুষের জন্য ভালো কাজের একটি আবহ তৈরি হয়। এর প্রভাবে মানুষ ভালো কাজ, ইবাদত-বন্দেগি ও দান-খয়রাতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। এতে মানুষের মধ্যে দান করার অভ্যাস গড়ে ওঠে। অধিকন্তু রোজার শেষ দিকে সামর্থøবান রোজাদারকে পানাহার করানো, দুস্থ-দরিদ্রদেরকে দান করা এবং বাধ্যতামূলকভাবে ফিতরা দেয়ার ফলে কৃপণতা বিদূরিত হয়ে বদান্যতা, দানশীলতা ও উদার মানসিকতার সৃষ্টি হয়, যা সমাজজীবনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রোজা মানুষকে প্রশিক্ষণ দিয়ে সমাজ ও মানুষের কল্যাণে দানের হস্ত সম্প্রসারণের স্বভাব গঠনে সহায়তা করে থাকে।
পরিশ্রমী ও কর্মঠ হওয়ার প্রশিক্ষণঃ রোজা মানুষকে জড়তা, অলসতা ও আরামপ্রিয়তা ঝেড়ে ফেলে কর্মঠ ও পরিশ্রমী হওয়ার শিক্ষা দেয়। রোজার দৈনন্দিন কার্যসূচি মানুষকে এ প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। সারাদিন কাজের শেষে ইফতারের পর মাগরিবের নামাজ আদায়, রাতের খাবারের পর দীর্ঘ সময় তারাবিহর নামাজ আদায়, সেহরি খাওয়ার জন্য শেষ রাতে জাগরণ, তারপর আবার ফজরের নামাজ আদায়, দিনের বেলায় নিজ নিজ কার্য সম্পাদন ইত্যাদি মানুষকে অলস বসে থাকার কোনো সুযোগই দেয় না; বরং তাকে একের পর এক কাজ করে যেতে হয়। এভাবে দীর্ঘ এক মাস অনুশীলনের ফলে মানুষের জড়তা ও অলসতা কেটে যায়, হয়ে ওঠে কর্মচঞ্চল ও পরিশ্রমী। রোজার এ শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে মানুষ যদি তার প্রতিটি সময় কাজে লাগায় তাহলে এ শ্রম জাতীয় উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
রোজা শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাজ করার শিক্ষা দেয়ঃ রোজা একটি ব্যতিক্রমধর্মী ইবাদত। অন্যান্য ইবাদতের মতো লোক দেখানোর জন্য এটি করার কোনো সুযোগ নেই। অন্যান্য আনুষ্ঠানিক ইবাদত, যেমন- নামাজ, জাকাত, হজ প্রভৃতি লোকচক্ষুর সামনে করতে হয় বলে সেগুলোতে প্রদর্শনেচ্ছু বা লোক দেখানোর মানসিকতা থাকার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু রোজার ক্ষেত্রে শুধু আল্লাহকে সন্তুষ্ট করা এবং তার হুকুম পালনের মানসিকতা ছাড়া অন্য কোনো কিছুর সুযোগ নেই। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, প্রত্যেক মানুষের ভালো কাজের বদলা দশ থেকে সাতশ’ গুণ পর্যন্ত বর্ধিত করে দেয়া হয়, কিন্তু আল্লাহ বলেন, রোজা এর ব্যতিক্রম। কেননা রোজা খাস করে আমার জন্য এবং আমি নিজেই এর প্রতিদান দেবো। বান্দাহ আমার কারণেই কামনা-বাসনা ও পানাহার বর্জন করে থাকে।’
অধীনদের প্রতি সদয় হওয়ার শিক্ষাঃ কতৃêত্বশালী ব্যক্তিরা অনেক ক্ষেত্রেই অধীনদের প্রতি দুর্বøবহার, জুলুম এবং অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে তাদের প্রতি অবিচার করে থাকে। এটি একটি অন্যায় আচরণ। রোজা অধীনদের প্রতি বাড়াবাড়ি না করে সদয় আচরণের নির্দেশ দেয়। হাদিসে এসেছে, ‘এ মাসে যে ব্যক্তি অধীনদের দায়িত্ব লাঘব করে দেয়, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেবেন।’
অপকর্ম বর্জনের শিক্ষাঃ রোজার মূল শিক্ষাই হলো অনাচার ও পাপাচারকে বর্জন করা। ‘সউম’ বা সিয়াম শব্দের অর্থ হলো বিরত থাকা বা বর্জন করা। রোজা শুদ্ধ ও গ্রহণযোগ্য হওয়ার জন্য জরুরি হলো মিথ্যা কথা ও অন্যায় কাজ সম্পূর্ণরূপে বর্জন করা। এ প্রসঙ্গে হাদিসে বলা হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি রোজা অবস্থায় মিথ্যা কথা ও অন্যায় কাজকে বর্জন করল না, তার পানাহার বর্জন আল্লাহর কোনোই প্রয়োজন নেই।’
রোজা অবস্থায় রোজাদারকে তার দেহের সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখতে হবে। অর্থাৎ তার মস্তিষ্ককে অন্যায় চিন্তা থেকে, চোখকে অন্যায় দেখা থেকে, নাককে অন্যায় ঘ্রাণ নেয়া থেকে, জিহ্বাকে অন্যায় বলা থেকে, হাতকে অন্যায় কাজ ও লিখা থেকে, পেটকে দিনের বেলায় সর্ব প্রকার এবং অন্যান্য সময় হারাম পানাহার থেকে, যৌনাঙ্গকে দিনের বেলায় স্ত্রী এবং অন্যান্য সময় অপর নারী থেকে এবং পাকে অন্যায় পথে চলা থেকে বিরত রাখতে হবে।
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার শিক্ষাঃ রোজা স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন জীবনের অধিকারী হওয়ার প্রশিক্ষণ দেয় এবং জবাবদিহিতার তীব্র অনুভূতি জাগ্রত করে। রোজার উদ্দেশ্য সম্পর্কে কুরআন কারীমে বলা হয়েছে, ‘হে ঈমানদাররা, তোমাদের ওপর রোজাকে ফরজ করে দেয়া হলো, যেমন ফরজ করে দেয়া হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর-যাতে তোমরা মুত্তাকি হতে পার।’ (বাকারাঃ ১৮৩)
‘তাকওয়া’ শব্দের অর্থ হলো অতি মাত্রায় সতর্ক থাকা, কোনো কিছুকে বর্জন করা বা কোনো কিছু হতে বিরত থাকা। আর মুত্তাকি বলা হয় সে ব্যক্তিকে, যে নিজেকে এমন সব কাজ থেকে বিরত রাখে, যা আখিরাতে তার জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। প্রতিটি অন্যায়, অনিষ্টকর ও জঘন্য কাজ, কথা এবং ভাবনাচিন্তা আখিরাতে ক্ষতি তথা আজাবের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। সুতরাং অন্যায় কাজ, কথা ও ভাবনাচিন্তা বর্জন করার নামই তাকওয়া এবং যিনি এগুলোকে সম্পূর্ণভাবে বর্জন করে চলেন, তিনিই হলেন মুত্তাকি।
সুতরাং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা সম্পন্ন এবং দুর্নীতিমুক্ত সৎ মানুষ গড়ার জন্য রোজার প্রশিক্ষণ একটি কার্যকর ব্যবস্থা। রোজার এ শিক্ষাকে কাজে লাগাতে পারলে দুর্নীতিমুক্ত সুন্দর সমাজ গঠন করা সম্ভব।