রোযার ফযীলত ও জরুরী মাসায়িল


আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন: (তরজমা) হে মুমিন সকল! তোমাদের উপর রমাযানের রোযা ফরয করা হল, যেমনিভাবে তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর ফরয করা হয়েছিল। যেন তোমরা মুত্তাকী ততে পার। (সূরা বাকারা-১৮৩)
হজুর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সহিত সওয়াবের আশায় রমাযান শরীফের রোযা রাখে, (অন্য বর্ণনায়) ঈমানের সহিত সওয়াবের আশায় তারাবীহের নামায পড়ে, তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। (বুখারী শরীফ: হা: নং ১৯০১)
রোযার নিয়ত
রমাযানের রোযার জন্য সুবহে সাদিকের পূর্বে মনে মনে এই নিয়ত করবে যে, ‘আমি আজ রোযা রাখব’ অথবা দিনে আনুমানিক ১১টার পূর্বে মনে মনে এইরূপ নিয়ত করবে যে, আমি আজ রোযা রাখলাম। মুখে নিয়ত করা জরুরী নয়, বরং মুস্তাহাব। (রদ্দুল: মুহতার: /৩৭৭)
বি. দ্র. : আরবী ভালভাবে বলতে পারলে ও বুঝলে আরবীতেও নিয়ত করতে পারবে। অন্যথায় বাংলায় নিয়ত করা ভাল।
সাহরী ও ইফতার
রোযাদারের জন্য সাহরী খাওয়া ও ইফতার করা সুন্নাত। বিশেষ কিছু না পেলে সামান্য খাদ্য বা কেবল পানি পান করলেও সাহরীর সুন্নাত আদায় হয়ে যাবে।
ইফতার খুরমা কিংবা খেজুর দ্বারা করা সুন্নাত। তা না পেলে পানি দ্বারা ইফতার করবে। ইফতারের কিছুক্ষণ পূর্বে এ দু‘আটি বেশী বেশী পড়বে:
يَا وَا سِعَ الْمَغْفِرَةِ اِغْفِرْلِىْ
অর্থঃ হে মহান ক্ষমা দানকারী! আমাকে ক্ষমা করুন। (শু‘আবুল ঈমান: /৪০৭)
بِسْمِ اللهِ وَعَلى بَرَكَةِ اللهِ
বিসমিল্লাহি ওয়া ‘আলা বারাকাতিল্লাহ বলে ইফতার শুরু করবে এবং ইফতারের পর নিম্নের দুটি দু‘আ পড়বে:
. اَللّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَعَلي رِزْقِكَ اَفْطَرْتُ
(অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমারই জন্য রোযা রেখেছি, এবং তোমারই দেয়া রিযিক দ্বারা ইফতার করলাম।) (আবূ দাঊদ: /৩২২)
. ذَهَبَ الظَّمَأُ وَابْـتَلَّتِ العُرُوْقُ وَثَبَتَ الاَ جْرُ اِنْ شَاءَ الله تَعَا لى
(অর্থঃ পিপাসা দূরিভূত হয়েছে, ধমনীসমূহ সতেজ হয়েছে, এবং ইনশাআল্লাহ রোযার সওয়াব নিশ্চিত হয়েছে।) (আবূ দাঊদ: /৩২১)
. ইফতারীর দাওয়াত খেলে মেজবানের উদ্দেশ্যে এই দু‘আ পড়বে:
عندكم الصائمون واكل طعامكم الابرار وصلت عليكم الملئكةاَفْطَرَ
(অর্থঃ আল্লাহ করুন যেন রোযাদারগণ তোমাদের বাড়ীতে রোযার ইফতার করে এবং নেক লোকেরা যেন তোমাদের খানা খায় এবং ফেরেশতাগণ যেন তোমাদের উপর রহমতের দু‘আ করে।) (আস্সুনানুল কুবরা, নাসাঈ ৬:৮১, ইবনুস সুন্নীঃ ৪৩৩)
রোযার গুরুত্বপূর্ণ মাসায়িল
. রমাযানের প্রত্যেক দিনেই ঐ দিনের রোযার নিয়ত করা জরুরী। একদিনের নিয়ত পুরো মাসের রোযার জন্য যথেষ্ট নয়। (দুররে মুখতার: /৩৭৯)
. যদি কেউ রোযার নিয়ত ব্যতীত এমনিতেই সারা দিন না খেয়ে থাকে, তাহলে এটা রোযা বলে ধর্তব্য হবে না। (রদ্দুল মুহতার: /৩৭৭)
. সুবহে সাদিকের পর খানা-পিনা জায়িয নেই। আযান হোক বা না হোক। লোক মুখে যে প্রচলিত রয়েছে যে, সুবহে সাদিকের পরেও আযান পর্যন্ত খাওয়া যায় তা সম্পূর্ণ ভুল। (রদ্দুল মুহতার:/৪১৯)
. রোযা অবস্থায় গোসল করলে রোযার কোন ক্ষতি হয় না। তবে কুলী করার সময় গড়গড়া করবে না এবং নাকে পানি দেয়ার সময় নাকের মধ্যে জোরে পানি টানবে না। (দুররে মুখতার: /৪১৯)
. রোযা অবস্থায় কাউকে রক্ত দিলে রোযার কোন ক্ষতি হয় না। যদি রক্তদাতার শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়ার আশংকা না থাকে।(রদ্দুল মুহতার: /৪১৯)
. রমাযান মাসের দিনে বা রাতে কেউ যদি বেহুঁশ হয়ে যায় এবং তা যদি কয়েকদিন বা অবশিষ্ট পুরো মাস পর্যন্ত দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে প্রথম যে দিন বেহুঁশ হয়েছে ঐ দিন বাদ দিয়ে বাকী দিনগুলীর রোযার কাযা করতে হবে।
(দুররে মুখতার: /৪৩২)
. রমাযান মাসে কেউ যদি পাগল হয়ে যায় তাহলে তার রোযা মাফ হয়ে যায়। তবে পুরো মাসের কোন অংশে সুস্থ হলে পূর্বের রোযাগুলোর কাযা করতে হবে। (আল বাহরুর রায়েক: /৫০৭)
. হস্তমৈথুন করলে রোযা ভেঙ্গে যায় এবং তার কাযা আদায় করা জরুরী। এটা জঘন্য পাপকার্য।
হাদীসে এইরুপ ব্যক্তির উপর লানত করা জয়েছে। (দুররে মুখতার: /৩৯৯)
. যদি রোযা অবস্থায় দাঁত দিয়ে রক্ত বের হয়ে কণ্ঠনালীতে পৌঁছে যায় এবং তা পরিমাণে কম হয়, তাহলে রোযা নষ্ট হবে না। আর যদি রক্ত থুথুর সমান বা থুথু থেকে বেশী হয় তাহলে রোযা ভেঙ্গে যাবে। এবং তার কাযা করতে হবে। (দুররে মুখতার: /৩৯৬)
১০. বাচ্চাকে দুধ পান করালে রোযার কোন ক্ষতি হয় না। কিন্তু নামায অবস্থায় দুধ পান করালে নামায ভেঙ্গে যায়। (দুররে মুখতার: /৩৭১)
১১. সফরে যদি কষ্ট হয় তাহলে রোযা না রাখা জায়িয আছে বরং না রাখা উত্তম। আর সফরে কষ্ট না হলে রোযা রাখাই হল মুস্তাহাব। তবে রোযা রেখে ভাঙ্গা ঠিক নয়। কেউ যদি ভেঙ্গে ফেলে তাহলে কাফ্ফারা আসবে কি না এ ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে। যদিও গ্রহণযোগ্য মত হল যে, এই সূরতে কাফ্ফারা ওয়াজিব হয় না। (আহসানুল ফাতাওয়া ৪:৪৪)
১২. কেউ রোযা রাখার পর মারাত্নক অসুস্থ হয়ে গেলে অথবা পূ্র্বের রোগ বেড়ে যাওয়ার প্রবল ধারণা হলে রোযা ভাঙ্গা জায়িয আছে। পরবর্তীতে কাযা করতে হবে। একান্ত কাযা করার শক্তি না পেলে উক্ত রোযার ফিদয়া দিতে হবে অর্থাৎ, প্রত্যেক রোযার বদলে একজন গরীবকে দু‘বেলা খাওয়াতে হবে বা পোনে দু’সের আটা কিংবা তার মূল্য গরীবকে দিতে হবে। (দুররে মুখতার: /৪২২)
১৩. নাবালেগ ছেলে-সন্তানদেরকে রোযা রাখার হুকুম করতে হবে, যদি তারা এর শক্তি রাখে এবং এর দ্বারা তাদের কোন ক্ষতি না হয়। আর দশ বৎসর বয়সে রোযা রাখতে শুরু না করলে প্রয়োজনে প্রহার করা যাবে। (দুররে মুখতার: /৪০৯)
১৪. রমাযানের দিনের বেলায় কোন ছেলে বা মেয়ে বালেগ হলে বা কোন কাফের মুসলমান হলে কিংবা মুসাফির সফর শেষ করলে বাকী দিন খানা-পিনা থেকে বিরত থাকতে হবে।
ঋতুবতী মহিলার হুকুম
. ঋতুবতী কোন মহিলার যদি দিনের বেলায় স্রাব বন্ধ হয়ে যায় তাহলে দিনের বাকী সময় খানাপিনা ইত্যাদি থেকে বিরত থাকতে হবে। আর কোন মহিলার রোযা অবস্থায় ঋতুস্রাব শুরু হয়ে গেলে তার জন্য উপবাস থাকা জায়িয নেই। বরং সে চুপে চুপে খানা-পিনা করবে এবং পরবর্তীতে রোযাগুলির কাযা করবে।(দুররে মুখতার: /৪০৮, ইমদাদুল আহকাম: /১৩৯)
. যদি কোন মহিলা ঔষধ সেবন করে ঋতুস্রাব বন্ধ রাখে তাহলে তাকে পুরো মাসই রোযা রাখতে হবে। তবে স্বাভাবিক নিয়মের বিপরীত করার দরুণ কাজটি ঠিক হবে না। (ফাতাওয়া রহীমিয়া: /৪০৪)
রোযা ভঙ্গ হওয়ার কারণসমূহ
. রোযা স্মরণ থাকা অবস্থায় কোন কিছু খাওয়া বা পান করা অথবা স্ত্রী-সহবাস করা। এত কাযা ও কাফ্ফারা (একেধারে দুই মাস রোযা রাখা) ওয়াজিব হয়।
. নাকে বা কানে তৈল বা ঔষধ প্রবেশ করানো।
. নস্য বা হাপানী রোগীর জন্য ইনহেলার গ্রহণ করা।
. ইচ্ছাকৃতভাবে মুখভরে বমি করা।
. বমি আসার পর তা গিলে ফেলা।
. কুলী করার সময় পানি গলার ভিতরে চলে যাওয়া।
. দাঁতে আটকে থাকা ছোলার সমান বা তার চেয়ে বড় ধরনের খাদ্যকণা গিলে ফেলা।
. মুখে পান রেখে ঘুমিয়ে পড়ে সুবহে সাদিকের পরে জাগ্রত হওয়া।
. ধুমপান করা।
১০. ইচ্ছাকৃতভাবে আগরবাতি কিংবা অন্য কোন সুগন্ধি দ্রব্যের ধোঁয়া গলধকরণ করা বা নাকের ভিতরে টেনে নেওয়া।
১১. রাত্র মনে করে সুবহে সাদিকের পর সাহরী খাওয়া বা পান করা।
১২. সূর্যাস্তের পূর্বে সূর্য অস্তমিত হয়েছে ভেবে ইফতার করা। এগুলোতে শুধু কাযা ওয়াজিব হয়, কাফফারা ওয়াজিব হয় না। কিন্তু রোযা ভেঙ্গে যাওয়ার পর দিনের বাকী সময় রোযাদারের ন্যায় পানাহার ইত্যাদি থেকে বিরত থাকতে হবে। (রদ্দুল মুহতার ও দুররে মুখতার: /৪০২)
রোযা মাকরুহ হওয়ার কারণসমূহ
. মিথ্যা কথা বলা।
. গীবত বা চোগলখোরী করা।
. গালাগালী বা ঝগড়া-ফাসাদ করা।
. সিনেমা দেখা বা অন্য কোন গুনাহে লিপ্ত হওয়া।
. সকাল বেলায় নাপাক অবস্থায় থাকা।
. রোযার কারণে অস্থিরতা বা কাতরতা প্রকাশ করা।
. কয়লা, মাজন, টুথ পাউডার, টুথপেষ্ট বা গুল দিয়ে দাঁত মাজা।
. অনর্থক কোন জিনিস মুখের ভিতরে দিয়ে রাখা।
. অহেতেুক কোন জিনিষ চিবানো বা চেখে দেখা।
১০. কুলী করার সময় গড় গড়া করা।
১১. নাকের ভিতর পানি টেনে নেয়া। (কিন্তু উক্ত পানি গলায় পৌঁছিলে রোযা ভেঙ্গে যাবে।)
১২. ইচ্ছাকৃত মুখে থুথু জমা করে গিলে ফেলা।
১৩. ইচ্ছাকৃতভাবে অল্প বমি করা।
(দুররে মুখতার: /৪১৬, বাদাইউস সানায়ে: /৬৩৫, কিতাবুল ফিকহ: /৯২৩)
যে সমস্ত কারণে রোযার ক্ষতি হয় না
. ভুলক্রমে পানাহার করা।
. আতর সুগন্ধি ব্যবহার করা বা ফুল ইত্যাদির ঘ্রাণ নেওয়া।
. নিজ মুখের থুথু ও কফ জমা না করে গিলে ফেলা।
. শরীর বা মাথায় তৈল ব্যবহার করা।
. ঠান্ডার জন্য গোসল করা।
. ঘুমে স্বপ্নদোষ হওয়া।
. মিসওয়াক করা।
. অনিচ্ছাকৃত বমি হওয়া
. চোখে ঔষুধ বা সুরমা ব্যবহার করা।
১০ যে কোন ধরনের ইন্জেকশন লওয়া। (রদ্দুল মুহতার ও দুররে মুখতার: /৩৯৪)

মুসলিম নেতাদের জন্য দোয়া

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبَّادٍ الْمَكِّيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ: قُلْتُ لِسُهَيْلٍ: إِنَّ عَمْرًا حَدَّثَنَا، عَنْ الْقَعْقَاعِ، عَنْ أَبِيكَ، قَالَ: وَرَجَوْتُ أَنْ يُسْقِطَ عَنِّي رَجُلًا، قَالَ: فَقَالَ: سَمِعْتُهُ مِنَ الَّذِي سَمِعَهُ مِنْهُ أَبِي، كَانَ صَدِيقًا لَهُ بِالشَّامِ، ثُمَّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ سُهَيْلٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ، عَنْ تَمِيمٍ الدَّارِيِّ، أَنّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ [ ج 2 : ص 37 ] عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: " الدِّينُ النَّصِيحَةُ، قُلْنَا: لِمَنْ؟ قَالَ: لِلَّهِ، وَلِكِتَابِهِ، وَلِرَسُولِهِ، وَلِأَئِمَّةِ الْمُسْلِمِينَ، وَعَامَّتِهِمْ ".حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ اللَّيْثِيِّ، عَنْ تَمِيمٍ الدَّارِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم بِمِثْلِهِ.وحَدَّثَنِي أُمَيَّةُ بْنُ بِسْطَامَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ يَعْنِي ابْنَ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا رَوْحٌ وَهُوَ ابْنُ الْقَاسِمِ، حَدَّثَنَا سُهَيْلٌ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ سَمِعَهُ وَهوُ يُحَدِّثُ أَبَا صَالِحٍ، عَنْ تَمِيمٍ الدَّارِيِّ، عَنِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِمِثْلِهِ

ইমাম তামিম দারেমি (রাঃ) থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, রাসুল (সাঃ) বলেছেন শুভ কামনা করার নামই দীন। লোকেরা জিঞ্জাসা করলেন : ইয়া রাসুল্লাহ ! কার জন্য ? তিনি বললেন, আল্লাহর জন্য, তার কিতাবের , তার রাসুলের, মুসলিম নেতাদের এবং মুসলিম সাধারনের জন্য ।
(মুসলিম শরীফ: মুসলিম বিন হাজ্জাজ (ওফাত ২৬১), কিতাবুল ইমান, বাবু বায়ানি ইন্নাদ্দিনা নাসিহাত , ২য় খন্ড : পৃষ্ঠা ৩৭, প্রকাশনা دار إحياء التراث العربي - বৈরুত )

জাওয়ামিউল কালামের তথ্য মতে , হাদিসটি ২০৬ খানা গ্রন্থের মধ্যে ৩১৬ জন রাবীর বর্ননা পাওয়া যায় , যার মধ্যে সহীহ বলেছেন - ৮৮ জন , হাসান (গ্রহনযোগ্য) বলেছেন -১৩২ জন , যয়ীফ বলেছন -৭৩ জন , অত্যান্ত যয়ীফ বলেছেন – ১৪ জন , অনুরুপ মতামত ব্যক্ত করেছন-৫ জন এবং মাওজু (জাল) বলেছেন ৪ জন ।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা সুরা আলে ইমরানের ১৯ নং আয়াতে বর্ননা করেন : إِنَّ الدينَ عِندَ ٱللَّهِ ٱلإِسْلاَمُ অর্থ্যাৎ “নিসন্দেহে (মানুষের) জীবন বিধান হিসেবে আল্লাহ তায়ালার কাছে ইসলামই একমাত্র (গ্রহনযোগ্য) ব্যবস্থা। মহান প্রভুর মনোনীত ব্যবস্থার এবং তার বাহকদের কল্যান কামনা করা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব নয় কি? সবিনয়ে উদাত্ত আহবান জানাই এ দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে উল্লেখিত হাদিস অনুযায়ী মুসলিম নেতাদের এবং মুসলিম সাধারনের জন্য কল্যান কামনা করার জন্য। কল্যান কামনা কিভাবে করতে হবে তা নিজস্ব সামর্থের ব্যাপার। কিন্তু সামর্থের ক্ষেত্রে শৈথিল্য প্রদর্শন নিশ্চয় অকল্যান কামনা করার শামিল। যার পরিনতি নিশ্চিত জাহান্নাম।

মানব জীবনে কোরবানীর শিক্ষা

মানব জীবনে কোরবানীর শিক্ষা

আজ থেকে প্রায় সাড়ে সাত হাজার বছর পূর্বে মুসলিম জাতির আদি পিতা হযরত আদম (আঃ)-এর সন্তান হাবিল ও কাবিলের মধ্যে বিবাহকে কেন্দ্র করে বিবাদ দেখা দিলে হযরত আদম (আঃ) তাদেরকে কোরবানী করার আদেশ দেনতখন থেকেই কোরবানীর প্রচলন শুরু হয়তবে সে সময় কোরবানীর নিয়ম ছিল ভিন্নভেড়া, দুম্বা, শস্য বা গম ইত্যাদি কোরবানীর জন্য পেশ করা হতোযার কোরবানী কবুল হতো আল্লাহপাকের হুকুমে আকাশ থেকে অগ্নি এসে তা ভস্মীভূত করে দিতযারটা কবুল হতো না তারটা এমনি পড়ে থাকতো

কোরবানীর পরিচয়ঃ কুরবানী আরবী শব্দএর অর্থ হচ্ছে অতিশয় নিকটবর্তী হওয়াইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় কোরবানী বলা হয় ঐ নির্দিষ্ট জন্তুকে যা একমাত্র আল্লাহপাকের নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশে নির্দিষ্ট সময়ে একমাত্র আল্লাহর নামে জবেহ করা হয়

কোরবানীর প্রকৃত উদ্দেশ্যঃ কোরবানী আল্লাহর নবী হযরত ইব্রাহীম (আঃ) ও হযরত ইসমাঈল (আঃ)-এর অতুলনীয় ত্যাগের স্মৃতি বহন করেকোরবানীর দ্বারা মুসলমানগণ ঘোষণা করে যে, তাদের কাছে আপন জানমাল অপেক্ষা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মূল্য অনেক বেশিকোরবানীর মাধ্যমে ত্যাগ ও উৎসর্গের দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করাই উদ্দেশ্যএর দ্বারা আল্লাহপাক মানুষের আন্তরিকতা যাচাই করেনপবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছেঃ لَن يَنَالَ ٱللَّهَ لُحُومُهَا وَلاَ دِمَآؤُهَا وَلَـٰكِن يَنَالُهُ ٱلتَّقْوَىٰ مِنكُمْ كَذٰلِكَ سَخَّرَهَا لَكُمْ لِتُكَبرُواْ ٱللَّهَ عَلَىٰ مَا هَدَاكُمْ وَبَشرِ ٱلْمُحْسِنِينَ } কখনই আল্লাহর নিকট পৌঁছায় না এগুলোর গোশত ও রক্ত, বরং পৌঁছায় তোমাদের তাকওয়া”(সূরা হজ্জ আয়াত-৩৭)কে কত টাকা খরচ করে পশু ক্রয় করেছে, কার পশু কত মোটা, কত সুন্দর, আল্লাহপাক তা দেখেন না বরং তিনি দেখতে চান কার অন্তরে কতটুকু তাকওয়া বা পরহেজগারী আছে হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত, দীর্ঘ হাদীসে প্রিয় নবী (সাঃ) ঘোষণা করেছেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহপাক তোমাদের শরীর ও চেহারা-সুরতের দিকে লক্ষ্য করেন না, কিন্তু তিনি লক্ষ্য করেন তোমাদের অন্তর এবং আমলের দিকে” (মুসলিম শরীফ)

ঐতিহাসিক পটভূমিঃ আল্লাহতায়ালা মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইব্রাহিম (আঃ) কে অনেকবার পরীক্ষা করেছেনসকল পরীক্ষায় তিনি অত্যন্ত সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হয়েছেনএকরাতে তিনি স্বপ্নে দেখলেন, আল্লাহপাক তাকে ইঙ্গিত করেছেন প্রাণধিক পুত্র হযরত ইসমাঈল (আঃ) কে কোরবানী করতেবৃদ্ধ বয়সের একমাত্র সন্তান হযরত ইসমাঈল (আঃ)-এর অপেক্ষা অধিকতর প্রিয় আর কি হতে পারেতিনি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সিদ্ধান্তে পৌঁছলেন যে, হযরত ইসমাঈল (আঃ) কে কোরবানী করবেনতখন তিনি হযরত ইসমাঈল (আঃ) বললেন, যা পবিত্র কোরআনে এভাবে বর্ণিত হয়েছেঃ فَلَمَّا بَلَغَ مَعَهُ ٱلسَّعْيَ قَالَ يٰبُنَيَّ إِنيۤ أَرَىٰ فِي ٱلْمَنَامِ أَني أَذْبَحُكَ فَٱنظُرْ مَاذَا تَرَىٰ قَالَ يٰأَبَتِ ٱفْعَلْ مَا تُؤمَرُ سَتَجِدُنِيۤ إِن شَآءَ ٱللَّهُ مِنَ ٱلصَّابِرِينَ * فَلَمَّا أَسْلَمَا وَتَلَّهُ لِلْجَبِينِ * وَنَادَيْنَاهُ أَن يٰإِبْرَاهِيمُ - হে বৎস! আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, তোমাকে আমি জবাই করছিএখন তোমার অভিমত কি?” সে (হযরত ইসমাঈল (আঃ)) বলল, “হে পিতা! আপনি যা আদিষ্ট হয়েছেন তাই করুনআল্লাহ চাহেতো আপনি আমাকে ধৈর্যশীলদের অন্তর্ভুক্ত পাবেন” (সূরা সফফাত আয়াত-১০২)ছেলের সাহসিকতাপূর্ণ জবাব পেয়ে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) অত্যন্ত খুশি হলেনমহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে ছেলের গলায় ছুরি চালানতখন হযরত জিব্রাইল (আঃ) আল্লাহর নির্দেশে বেহেশত হতে একটা দুম্বা নিয়ে রওয়ানা হলেন তার মনে সংশয় ছিল পৃথিবীতে পদার্পণের পূর্বেই হযরত ইব্রাহীম (আঃ) যবেহ কাজ সম্পূর্ণ করে ফেলবেনতাই জিবরাইল (আঃ) আকাশ হতে উচ্চৈস্বরে ধ্বনি দিতে থাকেন আল্লাহু আকবারআওয়াজ শুনে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) স্বতঃস্ফূর্তভাবে বলে উঠলেন, “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবারপিতার মুখে তাওহীদের বাণী শুনতে পেয়ে হযরত ইসমাঈল (আঃ) বলে উঠলেন আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিলহামদআল্লাহর প্রিয় দুই নবী এবং হযরত জিবরাইল (আঃ)-এর কালামগুলো আল্লাহর দরবারে এতই পছন্দনীয় হলো যে, কিয়ামত পর্যন্ত এই কথাগুলো ৯ই জিলহজ্ব ফজর থেকে আসর পর্যন্ত বিশেষ করে ঈদুল আযহার দিনে বিশ্ব মুসলিমের কণ্ঠে উচ্চারিত হতে থাকবে

আল্লাহপাকের অসীম কুদরতে হযরত ইসমাঈল (আঃ)-এর পরিবর্তে কোরবানী হয়ে গেল একটি বেহেস্তী দুম্বাকঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেন হযরত ইব্রাহীম (আঃ)এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পবিত্র কালামে ঘোষণা করেনঃ وَنَادَيْنَاهُ أَن يٰإِبْرَاهِيمُ * قَدْ صَدَّقْتَ ٱلرُّؤْيَآ إِنَّا كَذَلِكَ نَجْزِي ٱلْمُحْسِنِينَ * إِنَّ هَـٰذَا لَهُوَ ٱلْبَلاَءُ ٱلْمُبِينُ وَفَدَيْنَاهُ بِذِبْحٍ عَظِيمٍ * وَتَرَكْنَا عَلَيْهِ فِي ٱلآخِرِينَ *

তখন আমি তাকে ডেকে বললাম, হে ইব্রাহীম! তুমি তো স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করেছআমি এভাবেই সৎকর্মশীলদের প্রতিদান দিয়ে থাকিনিশ্চয় এটা একটা সুস্পষ্ট পরীক্ষাআমি তার (ইসমাঈল (আঃ)-এর পরিবর্তে দিলাম জবেহ করার জন্য এক মহান জন্তু” (সূরা সাফফাত আয়াত-১০৪-১০৭)বর্ণিত আছে যে, হযরত ইব্রাহীম (আঃ) উপরোক্ত গায়েবী আওয়াজ শুনে হযরত জিবরাইল (আঃ)কে একটি বেহেস্তী দুম্বাসহ দেখতে পানএ জান্নাতী দুম্বা হযরত ইব্রাহীম (আঃ) কে দেয়া হলে তিনি আল্লাহর নির্দেশে পুত্রের পরিবর্তে সেটি কোরবানী করলেনআর তখন থেকেই শুরু হলো কোরবানীর মহান বিস্ময়কর ইতিহাসযা অন্ততকাল ধরে সুন্নতে ইব্রাহীম হিসেবে বিশ্বের সকল মুসলমানের কাছে আজও স্মরণীয় হয়ে আছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত থাকবেকোরবানীর তাৎপর্যঃ কোরবানী একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতকোরবানীর তাৎপর্য ও ফজিলত সম্পর্কে বহু হাদীস পাওয়া যায়হযরত যায়েদ ইবনে আরকাম (রাঃ) বর্ণিততিনি বলেন, একদা কতিপয় সাহাবী প্রিয় নবী (সাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল!, কোরবানী কি? প্রিয় নবী (সাঃ) বললেন, তোমাদের (জাতির) পিতা হযরত ইব্রাহীম (আঃ)-এর সুন্নতপুনরায় প্রশ্ন করা হলো, এতে আমাদের জন্য কি আছে? রাসূলে পাক (সাঃ) বললেন, কোরবানী গরু ও বকরীর প্রতিটি পশমে নেকী রয়েছেতখন সাহাবায়ে কেরাম আবার জিজ্ঞেস করলেন, তাহলে ভেড়া ও দুম্বার ব্যাপারে আপনার অভিমত কি? তিনি উত্তরে বললেন, ভেড়া ও দুম্বার পশমেও ছওয়াব আছে। (আহমাদ, ইবনে মাযাহ, মিশকাত-১২৯)অন্য এক হাদীসে বর্ণিত আছে যে, কোরবানীর পশু পুলসীরাতের উপর তোমাদের বাহন হবেতাই তোমরা মোটা তাজা পশু কোরবানী করতারগীব নামক গ্রন্থে উল্লেখ আছে একবার হযরত নবী করিম (সাঃ) স্বীয় কন্যা ফাতেমাকে (রাঃ) ডেকে বললেন হে ফাতেমা! তুমি তোমার কোরবানীর জন্তুর নিকট যাও কেন না কোরবানীর জন্তু জবেহ করার পর রক্তের ফোঁটা মাটিতে পড়ার সাথে সাথে তোমার যাবতীয় গোনাহ মাফ হয়ে যাবেহযরত ফাতেমা (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! এটা কি শুধু আমার জন্য? প্রিয় নবী (সাঃ) জবাব দিলেন এটা সকল মুসলমানের জন্যহযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) থেকে বর্ণিততিনি বলেন, প্রিয় নবী (সাঃ) এরশাদ করেছেন, আদম সন্তান কোরবানীর দিন যেসব নেকীর কাজ করে থাকে তন্মধ্যে আল্লাহতায়ালার নিকট সবচেয়ে পছন্দীয় আমল হলো কোরবানী করাকেয়ামতের দিন কোরবানীর পশু তার শিং, পশম ও খুরসহ উপস্থিত হবে এবং কোরবানীর রক্ত জমিনে পড়ার পূর্বেই তা আল্লাহর নিকট কবুল হয়ে যায়অতএব, তোমরা এ পুরস্কারে আন্তরিকভাবে খুশী হও। (তিরমিযী, ইবনে মাযাহ্‌, মিশকাত-পৃ-১২৮)কোরবানী করার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহপাকের সন্তুষ্টি লাভের জন্য প্রাণ উৎসর্গ করাএ জন্যই প্রাণী জবেহ করার বিধান প্রবর্তিত হয়েছেএ বিধানকে অমান্য করে কেউ যদি কোরবানীর পশুর মূল্য দান করে দেয় অথবা তার পরিবর্তে খাদ্য-শস্য, কাপড় ইত্যাদি গরীবকে দান করে দেয় তবে তার দ্বারা আল্লাহপাকের এই হুকুম পালন করা হবে না এমনকি প্রতিটি পশমের বিনিময়ে যে সওয়াবের কথা রয়েছে তা থেকে বঞ্চিত হবে হাদীসে এরশাদ হয়েছে যে ব্যক্তি সঙ্গতি থাকা সত্ত্বেও কোরবানী করল না সে যেন আমার ঈদগাহে না আসে

কোরবানী কার উপর ওয়াজিবঃ যার উপর যাকাত ফরজ হয়েছে তার উপর কোরবানী করা ওয়াজিবতবে যাকাত এবং কোরবানী ওয়াজিব হবার জন্য নিসাব পরিমাণ সম্পদ কোরবানীর দিবসের আগের চব্বিশ ঘন্টা সঞ্চিত থাকাও জরুরী নয়বরং জিলহজ্ব মাসের নবম তারিখের আসরের সময় যদি নিসাব পরিমাণ মাল কারো হস্তগত হয় তাহলেই তার উপর কোরবানী ওয়াজিব হয়ে যাবে এমনকি ১০ জিলহজ্ব থেকে ১২ জিলহজ্ব এই তিন দিনের যেকোন একদিন মালিক হলেই কোরবানী ওয়াজিব হবেতাছাড়া নিম্নের শর্তগুলো পাওয়া গেলেই কোরবানী ওয়াজিব হবেঃ

(ক) কোরবানীর দিন নিসাব পরিমাণ মালের মালিক হওয়াকাজেই গরীবের উপর কোরবানী ওয়াজিব নয়
(
খ) সুস্থ মস্তিষ্কের অধিকারী হওয়া

(গ) স্বাধীন হওয়া

(ঘ) মুসলমান হওয়া

(ঙ) প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া

(চ) মুকিম বা স্থায়ী হওয়ামহিলাদের নিজস্ব সম্পদ নিসাব পরিমাণ হলে ব্যক্তিগতভাবে তার উপর কোরবানী ওয়াজিব হবে


কিরূপ পশু দ্বারা কোরবানী করতে হবেঃ কি কি পশু দ্বারা কোরবানী করা যাবে এবং কি ধরনের হতে হবে তা ইসলামী শরীয়ত নির্ধারণ করে দিয়েছেযথাঃ গরু, মহিষ, উট, ছাগল, ভেড়া এবং দুম্বা দ্বারা কোরবানী করা যেতে পারেএছাড়া অন্য জন্তু যত মূল্যবানই হোক বা সুস্বাদুই হোক, পশুই হোক আর পাখিই হোক কোরবানী দুরস্ত হবে নাযেমন হরিণ বা অন্য কোন জন্তু, হাঁস, মুরগি ইত্যাদি দিয়ে কোরবানী করলে জায়েজ হবে নাযেহেতু কোরবানীর জন্তুটি আল্লাহপাকের মহান দরবারে পেশ করা হয়ে থাকে এ জন্য এটি একটি উৎকৃষ্ট ধরনের মোটা তাজা সুস্থ সবল এবং সকল প্রকার ত্রম্নটিমুক্ত হতে হবেহযরত আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, প্রিয় নবী (সাঃ) আমাদেরকে নির্দেশ করেছেন যে, আমরা কোরবানীর পশুর চোখ ও কান ভালভাবে পরীক্ষা করে নেই এবং এমন পশু কোরবানী না করি যার কানে ছিদ্র আছে (তিরমিযী শরীফ)

বস্তুতঃ হযরত ইব্রাহীম (আঃ) মহান আল্লাহপাকের প্রতি পূর্ণ আত্মসমর্পণের যে অনুপম আদর্শ স্থাপন করেছেন তা যেমন অতুলনীয় ঠিক তেমনিভাবে চির অনুস্মরণীয়এতে কোন সন্দেহ নেই যে, আজ পৃথিবীতে লক্ষ কোটি মুসলমান হযরত ইব্রাহীম (আঃ)-এর মহান আত্মত্যাগের আদর্শকে অনুসরণ করে মহান আল্লাহর প্রতি পরিপূর্ণ আত্মসমর্পণের জন্য নিজেদের জানমাল কোরবান করছেসাথে সাথে নিজের সর্বস্ব পর্যন্ত কোরবানী করার বাস্তব শিক্ষা গ্রহণ করেছেনযার বাস্তব প্রতিচ্ছবি দেখতে পাওয়া যায় প্রতিটি মুমিন মুসলমানের গৃহে কোরবানীর দিনে